স্মার্ট হওয়ার ৫টি সহজ উপায় - স্মার্ট মানুষের ৭টি বৈশিষ্ট্য

চলাফেরার ক্ষেত্রে সবার আগে যে বিষয় গুলো আমাদের নজর কাড়ে,তা হলো স্মার্টনেস। আর এই স্মার্টনেস নিয়ে কেও জন্মায় না। অনেক গুলো বিষয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে স্মার্টনেস তৈরি হয়। আপনারা অনেকেই হয়তো স্মার্ট হতে চান,কিন্তু ভাবেন কিভাবে স্মার্ট হবো। আপনি যদি স্মার্ট হতে চান তাহলে সবার আগে আপনাকে স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্ট হওয়ার সকল বিষয় সম্পর্কে যানতে হবে। সমস্যা নেই আজকের আর্টিকেল এ আমরা স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্ট হওয়ার সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায়
আপনি যদি স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্ট হওয়ার সকল কৌশল সম্পর্কে যাবতীয় সঠিক তথ্য জানতে চান তাহলে নিচের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।   

স্মার্ট মানুষ হতে কি কি লাগে

স্মার্ট হওয়ার জন্য আপনাকে শুধু তথ্য শোষণের চেয়ে বেশি কিছু করা লাগে। স্মার্ট হওয়ার জন্য আপনাকে সবার আগে আপনাকে স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্ট হওয়ার সকল বিষয় সম্পর্কে যানতে হবে। আসল জ্ঞান আসে গভীরভাবে কোন বিষয়কে বোঝার মাধ্যমে। সবথেকে সফল ব্যক্তিরা অন্য ব্যক্তিদের তুলনায় তো এগিয়ে যাই কারণ তারা দ্রুত নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী। সময়ের পরিবর্তনের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে এবং যৌথ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে হয় সক্ষম। আপনাকে সঠিক জায়গায় সঠিক পোশাক পরিধান করতে হবে,আপনার উপস্থিত বুদ্ধি হতে হবে তুখোর,ব্যর্থতা স্বীকার করবেন,কখনো হার মানবেন না এবং স্মার্ট লোকদের সাথে চলাফেরা করবেন তাহলেই আপনি স্মার্ট হতে পারবেন।

স্মার্ট হওয়ার ৫টি সহজ উপায় 

সবার আগে আমাদের যে বিষয়গুলো নজর কাড়ে তা হলো স্মার্টনেস। অনেকগুলো বিষয় সমন্বয়ের মাধ্যমে স্মার্টনেস তৈরি হয়। স্মার্ট বলতে শুধুমাত্র নিজেকে সাজিয়ে রাখাই নয় বরং নিজেকে ভিতর থেকে উন্নতি করাই হলো স্মার্টনেস। আপনার ভিতরের ইতিবাচকতা প্রকাশ পায়ই স্মার্টনেস এর মাধ্যমে।স্মার্ট হওয়ার জন্য আপনাকে সবার আগে আপনাকে স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে। আসুন জেনে নেই স্মার্ট হওয়ার সহজ ৫টি উপায় সম্পর্কে- 

পরিপাটি থাকুনঃ দামি পোশাক পরিধান করার থেকেও পরিপাটি থাকাটা বেশ জরুরী। কারণ নিজেকে স্মার্টনেস দেখাতে চাইলে সবার প্রথমে আপনাকে পরিপাটি হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। আপনি কতটা স্মার্ট তা নির্ভর করবে আপনার কথা বলা,পোশাক,চালচলন কতটা গোছানো তার ওপর। এমনকি আপনার খাবার খাওয়ার ধরণ দেখে বলা যাবে আপনি আসলে কতটা স্মার্ট। 

অন্যের প্রশংসা করুনঃ যখন কোন ব্যক্তি মন থেকে অন্য কারো প্রশংসা করেন তখন তাকে দারুন লাগে। কারণ কারো মন বড় না হলে অন্যের প্রশংসা মন থেকে করতে পারে না। যেকোনো ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো তার প্রশংসা করা। কিন্তু তা মজা করে নয় প্রশংসা করতে হবে মন থেকে। এতে আপনার স্মার্টনেস ফুটে উঠবে। 

সাহায্য করার মানসিকতাঃ আপনি যদি একজন স্মার্ট ব্যক্তি হতে চান তাহলে আপনার মাঝে অন্যকে সাহায্য করা মানসিকতা থাকতে হবে। কারণ অন্যকে সাহায্য করার মাধ্যমেও স্মার্টনেস প্রকাশ পায়। তাই আপনার কাছে যদি কেউ সাহায্য চাই তাহলে যতটা সম্ভব তাকে সাহায্য করুন। এর কারনে আপনার ওপর অন্যদের ভরসা বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি অন্যদের দুঃসময় পাশে থাকেন তাহলে আপনার দুঃসময়ে ও অন্যদের পাশে পাবেন। 

একটুতেই রেগে যাবেন নাঃ রাস্তাঘাটে চলাফেরার ক্ষেত্রে অনেক সময় অনেক ঘটনা ঘটে যাতে আপনার রেগে যাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এমন কোন ঘটনা ঘটলে আপনি সাথে সাথেই প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। চুপচাপ থাকবেন,দেখবেন কিছুক্ষণ পর আপনার রাগ এমনিতেই কমতে শুরু করেছে। আবার আপনার প্রতি কেউ রাগ করলে,তার সাথে ঝগড়া করবেন না,কিছুক্ষণ পর দেখবেন তার রাগও কমে গেছে এবং সে আপনার কাছে লজ্জিত হতে পারে তার রাগের জন্য। 

পরিচিতি বাড়ুক অফলাইনেওঃ অন্য ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক যোগাযোগের সাহায্যে আপনার পরিচিত বাড়ুক সমস্যা নেই। কিন্তু একই সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করো। কারণ একটি বিষয় মাথায় রাখবেন অনলাইন বন্ধুদের লাভলি একটি চেয়ে অনেক বেশি দামি ও জরুরী আপনজনদের ভালোবাসা। তাই পারিবারিক জীবনে আপনি কতটা সামাজিক এবং বন্ধু হিসেবে আপনি কতটা ভালো এই সবই বুঝাবে আসলে আপনি কতটা স্মার্ট।

স্মার্ট হওয়ার ১৬টি বিজ্ঞানসম্মত উপায় 

কিছু মানুষ রয়েছে যারা অন্য মানুষদের তুলনায় অনেক বেশি স্মার্ট। তারা অনেক বুদ্ধিমান হয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। কিন্তু স্মার্টনেস অভিজ্ঞতা,পরিবেশ এবং বিভিন্ন উৎস থেকে গড়ে ওঠে। স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা বৈজ্ঞানিক পন্থায় তাড়াতাড়ি নিজেকে স্মার্ট করে তোলার ১৬টি উপায় বের করেছেন। যার মাধ্যমে ব্রেনের ক্ষমতার প্রদর্শনও করতে পারবেন। আসুন জেনে নেই স্মার্ট হওয়ার সেই ১৬টি বিজ্ঞানসম্মত উপায়। 
  • আপনি যখন রাস্তায় অনেক মানুষের মাঝে হাঁটবেন তখনও আপনি নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে পারেন। রাস্তায় সব মানুষই যে গতিতে হাটে আপনিও একই গতিতে হাঁটবেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সবার মধ্যে থেকে বেশি গতিতে হাঁটলে তাকে মনে করা হয় দলের বাইরের কেউ। আর সবার সাথে একই গতিতে হাঁটলে তাকে অনেক বেশি স্মার্ট মনে হয়। 
  • গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল মানুষ পাতলা গ্লাসের চশমা পরেন তাদেরকে দেখতে কম আকর্ষণীয় মনে হলেও তাদের অনেক বেশি বুদ্ধিমান মনে হয়। 
  • যৌথ এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল মানুষের হাতে অ্যালকোহলের মগ বা গ্লাস থাকে তাদেরকে বোকা দেখায়। আর যে সকল মানুষের হাতে জুস বা কোলড্রিংস থাকে তাদেরকে অনেক বেশি স্মার্ট দেখায়। 
  • বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখে,যারা নাম লিখার সময় মাঝের অংশটি পুরো লিখে না অদক্ষর ব্যবহার করেন,তাদেরকে প্রভাবশালী ও অনেক বেশি স্মার্ট বলে মনে করা হয়। যে সকল ব্যক্তির লেখনীতে ভোকাবুলারি ভালো, ওই সকল ব্যক্তিদের স্মার্ট ও বুদ্ধিমান বলে মনে করা হয়। 
  • প্রিন্স টন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২ সালে এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিনা কারণে বড় বড় ও কঠিন শব্দ ব্যবহার না করে যে সকল মানুষ সহজ শব্দের বৈচিত্র্যময় প্রয়োগ ঘটাতে পারে ওই সকল ব্যক্তিকে মানুষ স্মার্ট মনে করে। 
  • কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এক গবেষণায় বলেন যে সকল ব্যাক্তি তথ্য উপস্থাপন করেন গন্ধযুক্ত ও দৃশ্যমান প্রমাণের মাধ্যমে ওই সকল ব্যাক্তিকে অন্য সবার থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমান ও স্মার্ট মনে করা হয়।
  • নিরসভাবে একঘেয়ে কন্ঠে বক্তব্য উপস্থাপন করলে মানুষের নজর কারে না। তবে বক্তব্য যদি ব্যাখ্যামূলক এবং অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে উপস্থাপন করা হয় তাহলে ওই বক্তাকে অনেক বেশি স্মার্ট মনে করা হয়। বক্তব্য দেওয়ার সময় কন্ঠের স্বর কমানো বাড়ানোর মাধ্যমেও নিজেকে স্মার্ট করে উপস্থাপন করা যায়। 
  • লয়োলা মেরিমাউন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার নোরা এ মার্ফির ২০০৭ সালে এক গবেষণায় বলেন,যারা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে তাদের অনেক বেশি স্মার্ট মনে করা হয়। তিনি বলেন আন্তঃযোগাযোগের অন্যতম উপায় চোখে চোখ রেখে কথা বলা। চোখে চোখ রেখে কথা বলাকে বুদ্ধিমতার প্রকাশ বলা হয়। 
  • ওই বছরেই আরেকটি গবেষণায় তিনি বলেন,মানুষকে স্মার্ট করে তোলে আত্মবিশ্বাসী আচরণ। অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয় মানুষকে বুদ্ধিমান প্রমাণ করে আত্মবিশ্বাসী আচরণ। 
  • রুচিশীল ও সময়ের সাথে গ্রহণযোগ্য পোশাকের মানুষকেউ অনেক বেশি স্মার্ট মনে হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কোন শিক্ষক যদি ক্লাসরুমে ফরমাল পোশাক পড়ে আসেন তাহলে শিক্ষার্থীরা তাকে অনেক বেশি বুদ্ধিমতা সম্পন্ন বলে মনে করেন। 
  • নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে,যে সকল ব্যক্তি ডাক্তারদের মতো সাদা ল্যাপটপ পরিধান করেন তাদেরকে অনেক বেশি বুদ্ধিমান বলে মনে করা হয়। 
  • মানুষ অনেক বেশি স্মার্ট ও বুদ্ধিমান হতে পারে আন্তরিক হাসির মাধ্যমে। যারা আনন্দ প্রকাশ করেন তাদের মাঝে স্মার্টনেস ফুটে ওঠে। 
  • আপনাদের মধ্যে অনেকেই মুখে বিভিন্ন রকমের অলংকার পড়ে থাকেন। আংলিয়ার রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা যায়, যে সকল ব্যক্তি মুখে অলংকার পড়ে থাকেন তাদের আইকিউ কম বলে মনে করা হয়। 
  • ক্ষুদ্র পরিসরে এক গবেষণায় দেখা যায়,কঠিন সময়ে উপস্থিত বুদ্ধি স্মার্টনেস ও বুদ্ধিমতা ফুটিয়ে তোলে। ছেলেদের এই ধরনের উপস্থিত বুদ্ধিতে নারীরা আকৃষ্ট হন এবং তাদের চোখে স্মার্ট হয়ে ওঠেন। 
  • এক গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল ব্যক্তি নেতৃত্ব স্থানে চলে যান তাদেরকে অনেক বেশি স্মার্ট এবং বুদ্ধিমান বলে ধরে নেওয়া হয়। কোন ছোট দলের প্রধান কেও ওই দলের সবার চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান বলে ধরে নেওয়া হয়। 
  • দুই মনোবিজ্ঞানী ১৯৯৯ সালে এক গবেষণায় বলেন, কোন ব্যক্তি যদি কিছু না জানে এবং যদি সেই ব্যক্তির সেটা স্বীকার করে নেওয়া স্মার্ট নিচের লক্ষণ। এর সাহায্যে ওই ব্যক্তির সততাও ফুটে ওঠে।

স্মার্ট মানুষের ৭টি বৈশিষ্ট্য

স্মার্ট ব্যক্তিরা অন্য ব্যক্তিদের থেকে কেন আলাদা হয়,সেটা কি আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন? তারা কি জন্ম থেকেই স্মার্ট হয়,না তারা নিয়মিত চর্চার কারণে দক্ষতা অর্জন করে থাকেন? স্মার্ট শব্দটি কেউ যখন ব্যবহার করে,তখন আমাদের মনে প্রথমেই যে জিনিসটি আসে সেটি হল যুক্তির দক্ষতা ও একাডেমিক ক্ষমতা। শুধু শিক্ষাগত স্মার্ট বা উচ্চ আইকিউ থাকা মানেই স্মার্ট হওয়া নয়।

দুইজন ব্যক্তি কখনোই একই বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মাই না,সেজন্য একই প্যারামিটারে তাদের মাপ করা যায় না। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সৃজনশীল উপায়ে মোকাবেলা করার ক্ষমতা কে স্মার্ট বলে। এটি মানুষ সাথে নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না, শুধুমাত্র সময়ের সাথে সাথে অর্জিত হতে পারে। স্মার্ট হওয়ার জন্য আপনাকে সবার আগে আপনাকে স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে। আসুন বুদ্ধিমান বা স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে-

কতটা স্মার্ট তা নিয়ে কথা বলেন নাঃ স্মার্ট ব্যক্তিরা কখনো নিজেই নিজের সুনাম করে না। আসলে তাদের নিজের সুনাম করার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি স্মার্ট হলে সবাই তা লক্ষ্য করবে। যারা স্মার্ট বা বুদ্ধিমান তারা কখনো অন্যরা কি ভাবল বা বলল সেদিকে খেয়াল করেন না। উল্টো তারা তাদের মনকে বিস্তৃত করতে ও চারপাশে ঘটে যাওয়া জিনিসগুলোকে উপলব্ধি করতে ব্যস্ত থাকেন। 

একাকীঃ আপনারা অনেকেই বলতে পারেন একাকী মানে নিঃসঙ্গতা,কিন্তু আসলে ব্যাপারটা এর বিপরীত। আপনি যখন বেশি সময় মানুষজনের মধ্যে কাটান,তখন আপনার চারিদিকে কি কি ঘটছে তা খেয়াল করার জন্য খুব কম সময় পেয়ে থাকেন,তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তুত করার জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর আপনি যখন একা থাকেন তখন আপনি অনেক বেশি চিন্তা করতে পারেন এবং আপনার চারপাশে যা যা ঘটছে তা সবকিছুই আপনি লক্ষ্য করতে পারেন এবং অর্জন করতে পারেন আরও জ্ঞান। আপনি তাই স্মার্ট ব্যক্তিদের সাথে বেশি বেশি সময় কাটাবেন। 
স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য
ব্যর্থতা স্বীকার করেনঃ ব্যর্থতা জীবনের একটি অংশ এবং সেটি স্বীকার করাও একটু দক্ষতা, যা আমাদের সকলের মাঝেই থাকা উচিত। আমরা কখনো জয়ী হই আবার কখনো ব্যর্থ হই। এটি যে জীবনের একটি অংশ তা স্মার্ট লোকেরা ভালো বোঝেন। তাই তারা বার বার ব্যর্থ হওয়ার পরেও কখনো হাল ছাড়েন না। তারা ব্যর্থতা স্বীকার করেন,ভুলগুলো খুঁজেন এবং সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার চেষ্টা করেন। 

অভিজ্ঞতা থেকে শেখেনঃ শুধু বই পড়ার মাধ্যমে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা যায় না। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে শেখার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বেশ কিছু শেখার আছে যেটি ভবিষ্যতে আমাদের আরও ভালো করতে সহায়তা করবে। স্মার্ট ব্যক্তিরা সবসময় জ্ঞানের খোঁজ করেন এবং সাধারণ জিনিসগুলোর মাঝে নিদর্শন খুঁজে পান। যা কোন সাধারণ ব্যক্তি উপলব্ধি করতে পারেন না। 

দিবা স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করেনঃ স্মার্ট ব্যক্তির আরেকটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো তারা নিজেদের মনকে বিচরণ করতে দেন। এ গবেষণায় দেখা গেছে যে দিবাস্বপ্ন মানুষের সৃজনশীলতা এবং সমস্যার সমাধানের দক্ষতাকে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। দীপা স্বপ্ন বলতে বোঝায় কোন অদৃশ্যমান বিষয়ের উপর সরাসরি চিন্তা না করে অসচেতনভাবে সেই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা। ওই বিষয়টি থেকে দূরে সরে গিয়ে সেই দৃশ্যের মাঝে পরিবর্তন আনতে পারলে,তা ব্যক্তির সৃজনশীলতার স্তরকে আরো বাড়িয়ে তোলে। 

নিজেরাই সমাধান খুঁজে বের করেনঃ স্মার্ট ব্যক্তিরা কোন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়লে সাথে সাথেই অন্যর কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যান না। তারা সেই পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন ও বোঝার চেষ্টা করেন এবং নিজেরাই সমস্যার সমাধান বের করে,সেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসেন। এমনকি তারা বার বার ব্যর্থ হলেও হাল ছেড়ে দেন না। এটি আপনি হয়তো একগুয়ে মনে করতে পারেন,তবে এটি মানুষকে আসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং স্মার্ট করে তোলে। 

নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খুবই যত্নবানঃ হ্যাঁ,বর্তমান সময় হলো অর্থ। তবে আপনার স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয় তাহলে আপনি কিছুই অর্জন করতে পারবেন না। দিন শেষে দেখা যায় অর্থের চেয়ে স্বাস্থ্যই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ স্মার্ট ব্যক্তিরা প্রতিদিন তাদের স্বাস্থ্যের খেয়াল করেন এবং স্বাস্থ্যকেই তারা তাদের প্রথম ও প্রধান কাজ হিসেবে বিবেচনা করেন। যার জন্য তারা যে কোন কাজ ভালো ভাবে করতে পারেন এবং যে কোন কাজে ভালোও করতে পারেন।

স্মার্ট হওয়ার সাইকোলজি

আপনার নিজেকে কি বোকা মনে হয় নাকি স্মার্ট মনে হয়। আপনার আশেপাশে বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনদের দেখে মনে হয় তারা খুব স্মার্ট। তারা ঝটপট কাজ করে ফেলতে পারে তারা নিজেকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে আপডেট রাখে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন স্মার্টনেস মানে শুধু স্টেটমেন্ট এবং স্টাইল নয়। সুন্দর পোশাক ও ঝটপট কথা বললেই স্মার্ট হওয়া যায় না।

যখন আপনার বুদ্ধি খুলে তাড়াতাড়ি ও স্মৃতিশক্তি হয় অনেক ভালো এবং মেধার বিকাশ হয় আবার মন ফুরফুরে থাকে তখনই আপনি স্মার্ট হবেন। আপনি যদি অবসাদগ্রস্ত মন নিয়ে চলাফেরা করেন তাহলে আপনি কখনো স্মার্ট হতে পারবেন না। স্মার্টনেসের মানে যেটাই হোক না কেন,আপনার যদি নিজেকে ক্লান্ত ও ঝিমিয়ে পড়া মনে হয়, তবে তা কাটানোর উপায় আছে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যার অর্থ করতে পারলে মনের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। যদি মন থাকে তরতাজা,তাহলে যে কোন কাজে মন বসে,স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি পায়,মনোযোগ দিয়ে যে কোন কাজও করা যায় এবং বুদ্ধির হাওয়া বাতাস লাগে মগজে তখনই বুঝবেন আপনি স্মার্ট। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতিতে আপনি করতে পারবেন বাজিমাত। চিন্তার স্বচ্ছতা ও বুদ্ধি এবং তার সাথে উপস্থিত বুদ্ধি আপনাকে স্মার্ট করে তুলতে সাহায্য করে।

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন ঝিমন্তও নিস্তেজ জীবনে স্মার্ট হবেন কিভাবে? জাপানের সাইকোলজিস্টরা বলছেন, মিউজিক মনকে তরতাজা ও পজেটিভ রাখতে পারে। তাই আপনার মন যদি অবসাদগ্রস্থ হয়ে থাকে তাহলে তিন মিনিট সঠিক মিউজিক শুনলে দ্রুতই আপনার মনের অবসাদ কাটবে এবং নিজেকে মনে হবে চনমনে। মিউজিক হল এমন একটি থেরাপি যা মস্তিষ্ক ও মনকে অনেক কম সময়ে সজীব করতে পারে।
স্মার্ট হওয়ার সাইকোলজি
যদি আপনি নিজের পছন্দের মিউজিক শুনে খুশি হন তাহলে আপনার হ্যাপি হরমোনের লক্ষণ চালু হয়ে যাবে। মন থেকে নেগেটিভ চিন্তাভাবনা চলে যাবে এবং ব্রেনের কোষগুলো ফুরফুরে হয়ে উঠবে।স্ট্রেস দূর করতে এবং অবসাদ কাটাতে ক্রমশই গুরুত্ব বাড়ছে মিউজিক থেরাপির। মনোবিদরা কাউন্সেলিং এর পাশাপাশি সমান গুরুত্ব দিচ্ছে মিউজিক থেরাপিকে। এই মিউজিক থেরাপি ছোট এবং বড় উভয়েরই মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মস্তিষ্কে নিউরন রয়েছে,যা তো থাকে সিন্যাপসিসের মাধ্যমে। মস্তিষ্কে যে কোন তথ্য ইলেকট্রিক্যাল ইম্পালসে পরিণত হয়ে বাহিত হয় সিন্যাপসিস এর মাধ্যমে। মিউজিক শ্রবন করার সময়মস্তিষ্কে থেটা ও আলফা তরঙ্গ সৃষ্টি হয় যা সক্রিয় করে তোলে মস্তিষ্কের স্নায়ু গুলোকে। মস্তিষ্ককে রিলেক্স ও শান্ত করে এবং মনোযোগ বাড়ায় থিটা তরঙ্গ। সিন্যাপসিস শক্তিশালী হবে ততই বৃদ্ধি পাবে স্মৃতিশক্তি।

স্ট্রেস বাড়লে তা প্রভাব ফেলে স্মৃতিশক্তির ওপর। যে কোন বিষয়,পড়াশোনা,কাজ ইত্যাদি সিন্যাপসিস কে দুর্বল করে ফেলে। স্ট্রেস শরীরের সিরোটনিনের মাত্রা এবং গুড হরমোন ডোপেমাইন কমায়। গান শুনলে খিল গুড হরমোন বৃদ্ধি পায়,যা চাঙ্গা করে তোলে বুদ্ধি ও স্মৃতি শক্তিকে।মনোবিদরা দেখিয়েছেন আমাদের মস্তিষ্ক চলে ছন্দে।

চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে গানের ছন্দ। আর সেই গানের ছন্দে যদি ৪ থেকে ৫ মিনিট নাচ করা হয়,তবে শারীরিক সক্রিয়তাও বৃদ্ধি পায়। যেকোনো কাজ করার ক্ষেত্রে উৎসাহ আসে ও ভালো লাগে। তাই তখন আর আপনাকে সকলের মাঝে অবসন্ন,ক্লান্ত বা পিছিয়ে পড়া বলে মনে হবে না।

৩০ বছর পর কি স্মার্ট হওয়া যায়

ত্রিশ বছর পর আমাদের স্মৃতি হয়ে যায় বিবর্ণ ও কম গতিশীল এবং মন্থর হয়ে থাকে আমাদের মন। তবে এক গবেষণায় দেখা গেছে যে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কের অনেক কার্যকারিতা ও বাড়ে। এই বিষয়টি যারা পরিণত মহিলা নেতা রয়েছে তাদের জন্য দুর্দান্ত খবর। কারণ আমরা আরো বেশি তীক্ষ্ণ এবং স্মার্ট হতে পারি এবং প্রভাবশালী ও গতিশীল থাকতে পারি আগের মতই। তাই বলা যায় ৩০ বছর পরও আপনি চাইলে হতে পারেন।

স্মার্ট লোকদের সাথে কিভাবে থাকা যায় - স্মার্ট পোশাক কিভাবে পড়বো

যত বেশি আপনি স্মার্ট ব্যক্তিদের সাথে ইতিবাচকভাবে উঠাবসা করবেন,তারা তত বেশি আপনাকে সহায়তা করার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। স্মার্ট ব্যক্তিদের বিবেচনা করুন সমান হিসেবে। স্মার্ট ব্যক্তিদের সম্মান করুন এবং তাদের সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলবেন যেন মনে হয় তারা অন্য সবার চেয়ে আলাদা।পোশাক পরিধান করা আপনার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। 

আপনি যখন নরমাল অবস্থায় চলাফেরা করবেন তখন জিন্স এর পরিবর্তে ট্রাউজারস বেছে নিতে পারেন। আপনি যদি কোথাও কোন অনুষ্ঠানে যান বা অফিস প্রোগ্রামে যান তাহলে আপনি ক্যাজুয়াল শার্টের সাথে কোট এবং সু পড়তে পারেন। আর আপনি যদি টি-শার্ট পরিধান করতে পছন্দ করেন তাহলে সাহসী ডিজাইন বা গ্রাফিক্স ছাড়াই পোলোটাইপ টি শার্ট গুলো বেছে নিতে পারেন। এতে আপনাকে অনেক বেশি স্মার্ট মনে হবে।

লেখকের শেষ কথা 

বর্তমান সময়ে চলাফেরার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই স্মার্ট হওয়া উচিত। স্মার্ট হওয়ার জন্য আমাদের সবার প্রথমে স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। আর্টিকেল এ আমরা স্মার্ট হওয়ার সহজ উপায় ও স্মার্ট মানুষের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্ট হওয়ার সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আমাদের আর্টিকেলের সকল বিষয় আপনারা ভালোভাবে বুজতে পেরেছেন এবং এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনি স্মার্ট হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url