অর্জুন গাছের ছালের ৭টি উপকারিতা - অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা

অর্জুন গাছ অনেক ঔষধি গুনসম্পন্ন বহুল পরিচিত একটি গাছ। এই গাছ বাংলাদেশের অনেক জায়গায় দেখা যায়। অর্জুন গাছের পাতা,ছাল ও ফল সবকিছুই অনেক উপকারী এবং ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন। আপনারা হয়তো অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা,অর্জুন গাছের পাতা ফল ও ছাল খাবার নিয়ম এবং অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা সম্পর্কে অনেক জায়গায় খুঁজেছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি। আজকের আর্টিকেলে অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও তা কিভাবে খেলে উপকার পাবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য আলোচনা করব।
অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা
আপনি যদি অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা এবং অর্জুন গাছের ছাল,পাতা,ফল ইত্যাদি খাবার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকাঃ

অর্জুন গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অনেক জনপ্রিয়। অর্জুন গাছ টার্মিনালিয়া মহাজাতির অন্তর্ভুক্ত একটি বৃক্ষ। অর্জুন গাছের অনেক ঔষধি গুন রয়েছে,যা গাছের পাতা,ফল এবং ছাল হতে পাওয়া যায়। এই অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা রয়েছে অনেক এবং পাশাপাশি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা হার্টের রোগীদের চিকিৎসার জন্য অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

অর্জুন গাছ বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই দেখা যায়। বিশেষ করে রাস্তার দুই পাশে এই অর্জুন গাছ বেশি দেখা যায়,তাছাড়া অর্জুন গাছের বীজ থেকে অর্জুন গাছের চারা তৈরি করা যায়। অর্জুন গাছের উচ্চতা ২০ থাকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হয়। এই গাছের ছাল মসৃণ এবং ধূসর রঙের হয়ে থাকে। তবে কিছু সবুজ ও লালচে ভাব আছে এর মধ্যে। অর্জুন গাছের পাতাগুলো দেখতে অনেকটাই আয়তকার হয়ে থাকে।অর্জুন গাছের প্রতিটি শাখায় পাতা একটি অপরটির উল্টো দিকে অবস্থান করে। 

এই অর্জুন গাছের অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। সেজন্য বলা যায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঔষধ হিসেবে অর্জুন গাছের ছাল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্জুন গাছের ছাল সেবন করলে অনেক উপকার পাওয়া যায় যেমনঃ কাশি ভালো হয়,প্রসাবের বাধা দূর হয়,শরীরের মেদ দূর করে, প্রদাহ হ্রাস করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায় ইত্যাদি আরো বহু ঔষধি গুণ রয়েছে। যার সাহায্যে অনেক মানুষ উপরোক্ত রোগের ভালো ফল পেয়ে থাকে। তাছাড়া আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে অর্জুন গাছের ছালের রসের।

অর্জুন গাছের ছালের রসের উপকারিতা

অর্জুন গাছ হল টার্মিনালিয়া মহাজাতির অন্তর্ভুক্ত একটি বৃহৎ বৃক্ষ। এই গাছ ২০ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। অর্জুন গাছের প্রতিটি কান্দে অনেক ভাজ/ স্তর থাকে। অর্জুন গাছের ছাল পাতলা স্তরে আলাদা আলাদা। অর্জুন গাছের পাতা দেখতে লম্বা ধরনের হয়,ফুল দেখতে স্পাইক সোজা এবং হলুদ রঙের হয়,অর্জুন গাছের ফুলের পাপড়ি হয় না। অর্জুনের ফল প্রায়ই কাপরাঙ্গা ফলের মতো দেখতে,যার লম্বা ৫ টি ভাজ ও পাখা রয়েছে। অর্জুন গাছের ফল,পাতা,ছাল ইত্যাদি সবকিছুই ঔষধি গুণে ভরপুর।

অর্জুন গাছের ছালের রস সেবন করলে হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগ এবং ব্রেন স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে। অর্জুন গাছের ছালের রস শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে। অর্জুন গাছের ছাল থ্যাতা করে রস বের করে তা সেবন করলে হার্টের বেশি শক্তিশালী হয় এবং হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অর্জুন গাছের ছালের রস কিভাবে খেতে পারেন আসুন তা জেনে নেই। অর্জুন গাছের ছাল থ্যাতা করে রস বের করে,সেই রস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন।

আপনার কাছে অর্জুন গাছের ছালের কাঁচা টাটকা রস না থাকলে আপনি অর্জুন গাছের শুকনো ছালের গুড়া করে তা এক গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সেবন করতে পারেন। আপনি যদি এই রস সেবন করেন তাহলে আপনি অনেক ধরনের উপকার পাবেন, যেমনঃ কান ব্যথা,দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া,হাঁপানি,অ্যাজমা,এলার্জি, মুখে ফোসকা পড়া ইত্যাদি আরো অনেক রকমের রোগ থেকেমুক্তি পেতে পারেন।

তাছাড়াও যারা গ্যাস্ট্রিক এবং শ্বাসকষ্ট রোগে ভোগেন তারা প্রতিদিন অর্জুন গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলা খালি পেটে সেবন করতে পারেন, ভালো ফলাফল পাবেন। এছাড়াও শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে,বুকের ধর পড়ানি,হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে,হার্টের রগ গুলোকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে,যার কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রোধ করতে সহায়তা করে।

অর্জুন গাছের ছাল খেলে কি হয়

অর্জুন গাছ হলো বহু ঔষধি গুনসম্পন্ন একটি গাছ। এই অর্জুন গাছের ছালের অনেক উপকারিতা রয়েছে। অর্জুন গাছের ছাল সেবন করলে শরীরের নানা রকমের সমস্যা নিমিষেই দূর করে দিতে পারে। অর্জুন গাছের ছাল শরীরের নানা রকমের সমস্যা মুহূর্তের মধ্যেই ভালো করে দেয়।এই অর্জুন গাছের ছাল শরীরের বিভিন্ন রকমের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। সেজন্য আমাদের সকলেরই এই অর্জুন গাছ এবং এর ছাল ও এর উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত। অর্জুন গাছের ছাল খেলে কি হয় আসুন জেনে নেই।
অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার উপকারিতা
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ অর্জুন গাছের ছালে রয়েছে অনেক ঔষধি গুনাগুন। অর্জুন গাছের ছালয় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। ক্যান্সার থেকে মানুষকে মুক্ত করতে পারে অর্জুন গাছের ছালের এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান এবং মুহূর্তের মধ্যেই বের করে দেয় শরীরে থাকা ফ্রি রেসিক্যাল।

গলা ব্যথা কমায়ঃ সাধারণত গলায় ইনফেকশনের কারনে গলা ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি চাইলে নিমিষেই গলা ব্যথা কমাতে পারেন। এর জন্য আপনাকে সেবন করতে হবে অর্জুন গাছের ছাল। এই অর্জুন গাছের ছাল আপনার গলা ব্যথা নিমিষেই ভালো করে দিবে। তাই আপনাকে সেবন করতে হবে অর্জুন গাছের ছাল।

হার্ট ভালো রাখেঃ অর্জুন গাছের ছাল পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করলে হার্ট ভালো থাকে। এই অর্জুন গাছের ছাল মিশ্রিত পানি আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সহায়তা করে,যার কারণে আপনার হার্ট সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে।

ক্ষত সারাতে পারেঃ অর্জুন গাছের ছালের একটি অন্যতম উপাদান হলো ট্যানিন। এই ট্যানিন উপাদান দ্রুত ক্ষত ভালো করতে সাহায্য করে। সেজন্য শরীরের কোন অংশে ক্ষত হলে তা দ্রুত সারাতে আপনি অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারেন। দেখবেন আপনার ক্ষত অনেক দ্রুত সেরে যাবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ এখন প্রায়ই প্রতিটি ঘরেই ডায়াবেটিসের রোগী দেখা যায়। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেক হাঁটাচলা করতে হয়। অর্জুন গাছের ছাল সেবন করলে আপনি এই সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন। অর্জুন গাছের ছাল সেবন করলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে আপনার ডায়াবেটিস।

অর্জুন গাছের পাতা ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে অর্জুন গাছের ফল,ছাল এবং পাতা অনেক জনপ্রিয়। অর্জুন গাছের ছাল এর উপকারিতা অনেক। চিনি এবং দুধের সঙ্গে অর্জুন গাছের ছালের গুঁড়া মিশিয়ে সকালে খালি পেটে সেবন করলে বুক ধরফর এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। অর্জুন গাছের ছালের রস খেলে নিম্ন রক্তচাপ সমস্যার ক্ষেত্রে উপকার মিলে। রাতে ৪ থেকে ৫ গ্রাম অর্জুন গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে সেই পানি সেবন করলে আপনি রক্তক্ষরণ সমস্যার ক্ষেত্রে উপকার পাবেন।
অর্জুন গাছের পাতা আপনি ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
তাছাড়াও অর্জুন গাছের পাতা আপনি ভিজিয়ে সেবন করলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অর্জুন গাছের ছাল হার্টের রোগ উপশমের ব্যবহার করা হয়। অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা অনেক। সেই জন্য বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করা হয়।এছাড়াও আপনার শরীরে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকলে অর্জুন গাছের ছাল খেতে পারেন, উপকার পাবেন।

অর্জুন গাছের ছালের ৭টি উপকারিতা

অর্জুন গাছ অনেক ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন একটি গাছ। এই অর্জুন গাছের পাতা, ফল এবং ছাল সবই উপকারি। এই অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা বহুল। বিভিন্ন রোগের নিরাময়ে এই অর্জুন গাছের ছাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আসুন অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ত্বকের যত্নেঃ আপনার ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যা অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করলে নিমিষেই দূর হয়ে যাবে। অর্জুন গাছের ছালের সাথে ৫ গ্রাম বাদাম ও হলুদ এবং ৫ গ্রাম কর্পূর একসঙ্গে মিশিয়ে ভালোমতো পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেই পেস্ট ত্বকের ওপর প্রয়োগ করুন। দেখবেন ত্বকের বলিরেখা দূর হয়ে গেছে ও ত্বকের কালো ভাব দূর হয়ে গেছে এবং ত্বক হবে মসৃন,কোমল এবং উজ্জ্বল।

মুখের ফুস্কার চিকিৎসায়ঃ আপনি যদি মুখের ফুস্কার দ্বারা ব্যাপক বিরক্ত হয়ে থাকেন তাহলে অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারেন,ভালো ফল পাবেন। সেই জন্য আপনাকে নারকেল তেলের সঙ্গে অর্জুন গাছের ছালের চূর্ণ মিশিয়ে সেটা আপনার মুখের ফুস্কার ওপর লাগালে আপনি মুখের ফুস্কার এই বিরক্ত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাছাড়াও আপনি যদি উপরোক্ত মিশ্রনের সঙ্গে অল্প গুড় যোগ করে খান তাহলে আপনি জ্বর থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা অনেক। অর্জুন গাছের ছাল সেবন করলে আপনার শরীরের রক্ত প্রবাহের বাধা দূর হয়। সেই জন্য আপনাকে অর্জুন গাছের শুকনো ছালের গুড়া ২ গ্লাস জলে মিশিয়ে গরম করতে থাকুন যেন ২ গ্লাস জল অর্ধেক হয়ে যায় এবং সেই মিশ্রণটি সকাল ও সন্ধ্যায় আপনি সেবন করতে পারেন।এইভাবে সেবন করলে আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে এবং বন্ধ ধমনী খুলবে।

মেদ দূর করেঃ আপনাদের মধ্যে যারা মেদ নিয়ে চিন্তায় ভুগছেন,তারা অর্জুন গাছের সালের মিশন সকাল ও সন্ধ্যায় সেবন করলে অতিরিক্ত মেদের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আপনি যদি অর্জুন গাছের ছাল সেবন করেন তাহলে আপনার ওজন দ্রুত কমবে এবং ৩০ দিনের মধ্যেই আপনি আপনার শরীরে মেদের পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

কাশির উপশমেঃ অর্জুন গাছের সালের রসের সাথে অর্জুন গাছের সবুজ পাতা মিশিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। সাতবার মেশানো হয়ে গেলে বাকি যা থাকবে তা দিয়ে চূর্ণ তৈরি করতে হবে। এই চুর্ণ দুধের সাথে মিশিয়ে কাশির রোগীকে খাওয়ালে দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।

হৃদরোগের ব্যাধি নিরাময়ঃ অনিয়মিত হৃদস্পন্দন এবং হার্টের সকল সমস্যা এই অর্জুন গাছের ছাল সহজেই দূর করতে পারে। এই অর্জুন গাছের ছাল রোগীকে স্ট্রোকের হাত থেকে মুক্ত করে। তাছাড়াও পেয়াজও অর্জুন গাছের ছাল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে হার্টের রোগীকে সেবন করালে হার্টের রোগীর বেশি শক্তিশালী হয়। এই অর্জুন গাছের ছাল হার্ট ব্লক প্রতিরোধ করতে বেশ কার্যকর। ২০ মিলিমিটার অর্জুন গাছের ছাল আধা কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ৩ মাস নিয়মিত পান করলে আপনি আপনার শরীরের সব ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

উন্নত চুলের জন্যঃ বর্তমান সময়ে অনেক মানুষেরই চুলের সমস্যা দেখা যায়। তাই চুলের সমস্যা দূর করতে অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারেন। অর্জুন গাছের ছাল এবং মেহেদি পাতার পেস্ট তৈরি করে তা মাথায় চুলে ব্যবহার করলে চুল কালো হয়। সেই সঙ্গে চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত করে।

অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা

অর্জুন গাছ অনেক ঔষধি সম্পন্ন একটি গাছ। এই অর্জুন গাছের পাতা,ফল এবং ছাল সব কিছুরই অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতার সাথে এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। আসুন সেই অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অর্জুন গাছের ছাল অনেক ক্ষতিকর। সেই জন্য অর্জুন গাছের ছাল অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।
  • যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের খুব সতর্কতার সাথে অর্জুন গাছের ফল ব্যবহার করতে হবে।
  • অর্জুন গাছের ছাল চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।

অর্জুন গাছের ফলের উপকারিতা

অর্জুন গাছ অনেক ঔষধি গুনগণ সম্পন্ন একটি উপকারী গাছ। অর্জুন গাছের পাতা ফল এবং ছাল সবকিছুই অনেক উপকারী। অর্জুন গাছের ছাল যেমন উপকারী তেমনি অর্জুন গাছের ফলও অনেক উপকারী। অর্জুন গাছের ফল খেলে শরীরে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। অর্জুন গাছের ফল প্রসাবে বাধা এবং লিভার সিরোসিসর এর ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

অর্জুন গাছের ফলে ট্যানিন উপাদান রয়েছে,যা মুখ,মাড়ী ও জিহ্বা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। তাছাড়াও অর্জুন গাছের পাতা,ফল,ছাল আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্জুন গাছের কাঠ অনেক শক্ত হওয়ার কারণে নলকূপ খনন,কৃষি উপকরণ,বাড়ি,নৌকা তৈরিতে অর্জুন গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকালে গরুর গাড়ির চাকা তৈরি করতে অর্জুন গাছের কাঠ ব্যবহার করা হতো। অর্জুন গাছের ফল খেলে হাঁপানি রোগে উপকার পাওয়া যায়। 

ভাঙ্গা হাড় জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্জুন গাছের ছালের পেস্ট ব্যবহার করলে দ্রুত জোড়া লাগে। কিন্তু অর্জুন গাছের ছালের টেস্টের প্রলেপ লাগানোর পূর্বে ভাঙ্গা হাড় গুলোকে সঠিকভাবে পুনঃস্থান করতে হবে। শরীরের শক্তি ফিরিয়ে আনতে এবং মনকে ভালো করতে অর্জুন গাছের ফল সেবন করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তাই বলা যায় অর্জুন গাছের ফলের উপকারিতাও অনেক।

অর্জুন গাছের ছালের গুড়া খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

অর্জুন গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে বেশ পরিচিত একটি গাছ। এই অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা অনেক। আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ ভালো করতে অর্জুন গাছের ছাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আসুন অর্জুন গাছের ছালের গুড়া খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

অর্জুন গাছের ছাল রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খালি পেটে সেবন করলে গ্যাস্ট্রিক ও শ্বাসকষ্ট রোগে উপকার পাওয়া যায়। তার সঙ্গে বুক ধরফর ও শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। অর্জুন গাছের ছাল সেবন করলে হার্টের রোগগুলোকে পরিষ্কার রাখে,যার কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে রোগীকে রক্ষা করে। 

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতার কোন শেষ নাই, পেটের যেকোন রোগের ক্ষেত্রে অর্জুন গাছের ছাল বেশ উপকারী। এটি পেটের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। মুখের মাড়ির রক্তপাত নিরাময়ে অর্জুন গাছের ছাল সাহায্য করে। অর্জুন গাছের ছাল দিয়ে চা তৈরি করে খাওয়া যায়। সেই জন্য অর্জুন গাছের শুকনো ছালের গুড়া/পাউডার এর সাথে মধু অথবা গুঁড় মিশিয়ে চা বানিয়ে সেবন করা যায়। এটি পান করলে হার্ট ভালো থাকে এবং হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়।

অর্জুন গাছের পাতার বৈশিষ্ট্য

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতার সঙ্গে এর পাতারও অনেক গুরুত্ব রয়েছে। মানুষ নানা রকম প্রয়োজনে অর্জুন গাছের ছাল,পাতা ও ফল বহুদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে। অর্জুন গাছ একসময় অনেক কম দেখা গেলেও বন বিভাগের জন্য অর্জুন গাছ এখন যে কোন জায়গায় সহজেই দেখা যায়। প্রাচীনকাল থেকেই অর্জুন গাছের ঔষধি গুন বেশ জনপ্রিয়। প্রাচীন কাল থেকেই অনেক মানুষ অর্জুন গাছের বিভিন্ন ঔষধি গুণ আবিষ্কার করেন এবং তা বিভিন্ন রোগের হিসেবে ব্যবহার করতেন। হার্টের রোগীদের জন্য অর্জুন গাছ অনেক পরিচিত এবং কার্যকর।
অর্জুন গাছের পাতার বৈশিষ্ট
শীতকালে অর্জুন গাছের পাতা ও ফল ঝরে পড়ে যাই। বসন্ত কালে এই গাছে আবার নতুন পাতার জন্ম হয়। অর্জুন গাছের কাঠ অনেক শক্ত হওয়ার শর্তেও এই কার্ড দিয়ে আসবাবপত্র বানানো যায় না। এই কার্ড নৌকা ও গরুর চাকা বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। অর্জুন গাছের ছালে ট্যানিন ও রঞ্জক উপাদান থাকায় রেশম শিল্পের জন্য অনেক উপকারি।

লেখকের শেষ কথা

প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে অর্জুন গাছ বেশ পরিচিত। অর্জুন গাছ নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আজকের আর্টিকেলে অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা এবং অর্জুন গাছের ছাল কিভাবে খেলে উপকারিতা মিলবে ও কি কি উপকারিতা মিলবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা অর্জুন গাছের সকল উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url