হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ৭টি ঘরোয়া উপায়

বর্তমান সময়ে হাঁটুর ব্যাথা খুবই কমন একটি সমস্যা। প্রায়ই প্রতিটি পরিবারেই এ হাঁটুর ব্যাথার সমস্যা দেখা যায়। আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো হাটুর ব্যাথায় ভুগছেন। আপনারা হয়তো হাঁটুর ব্যাথা সারানোর জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন, কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি। সমস্যা নেই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় ও হাঁটুর ব্যাথা সারানোর খাবার এবং হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়
আপনি যদি হাঁটুর ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে চান এবং হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম অথবা হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

হাঁটু ব্যাথা হয় কি কি কারনে

স্বাভাবিকভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে অথবা শরীরের ওজন বাড়লে হাঁটুর জয়েন্টে ব্যাথা সৃষ্টি হয়। কিন্তু অনেক মানুষের এই হাঁটু ব্যাথার সমস্যা কম বয়সেও দেখা দেয়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ব্যাথা হয় মূলত তিনটি কারণে। যথা-
  • আঘাতজনিত
  • ক্ষয়জনিত
  • বাতজনিত
খেলাধুলা করতে গিয়ে ইনজুরি অথবা দুর্ঘটনায় লিগামেন্টের আঘাত থেকে হাটু অথবা হাঁটুর জয়েন্টে ব্যাথা সৃষ্টি হয়। আবার কারটিলিস নামের যে নরম হার হাঁটুর জয়েন্ট এর কাছে থাকে সে হারে ক্ষয় দেখা দিলে হাঁটুতে ব্যাথা হয়।

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ৭টি ঘরোয়া উপায়

বর্তমানে হাঁটুর ব্যাথা একটি কমন সমস্যা। যে সকল মানুষের এই হাঁটুর ব্যাথা সমস্যা রয়েছে তাদের একটু সিঁড়িতে উঠানামা করলে অথবা হাঁটলে ব্যাথা বেড়ে যায়। কারো হাটুর ব্যাথা কম হয় আবার কারো কারো ব্যাথা বেশি হয়। কোন কোন সময় এই হাঁটুর ব্যাথার জন্য অপারেশনেরও প্রয়োজন হয়। তবে এই ব্যাথা যদি আঘাত জনিত বা সামান্য কোনো কারণে অথবা আর্থাইটিস হয় তাহলে এই ব্যাথা বাড়িতেই সারানো সম্ভব। কিন্তু হাঁটু ঠিক কি কারনে ব্যাথা হচ্ছে সেটা জানার জন্য এক্স-রে করা প্রয়োজন। আসুন জেনে নেই হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।

  • হাঁটুর ব্যাথা দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল আক্রান্ত স্থানে বরফের ব্যবহার। কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে আক্রান্ত স্থানে ২০ থেকে ২৫ মিনিট ঘষুন। সারাদিনে ২ থেকে ৩ বার এই উপায় প্রয়োগ করলে ব্যথা অনেকাংশে কমে যাবে।
  • হাঁটুর ব্যাথা নিরাময়ে আপেল সিডার ভিনেগার খুব কার্যকরী। ২ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে ২ থেকে ৩ বার পান করুন অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে ব্যাথাযুক্ত স্থানে কিছুক্ষণ মেসেজ করুন বা ভিনেগার পানির মধ্যে মিশিয়ে ২৫ মিনিট পর হাঁটুতে লাগান। এভাবে কয়েকদিন করুন দেখবেন ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
  • হাঁটুর ব্যাথার জন্য মরিচের গুড়াও বেশ উপকারী। এক কাপ হালকা গরম পানিতে অলিভ অয়েল এর সঙ্গে দুই চামচ মরিচের গুড়া মিশিয়ে ব্যাথাযুক্ত হাঁটুতে ম্যাসাজ করুন। যারা আর্থাইটিসের ব্যথায় ভুগছেন তারা তো আরাম পেয়ে যাবেন। ৭ দিনে কমপক্ষে দুই দিন লাগালে হাঁটুর ব্যাথা অনেক অংশেই কমে যাবে।
  • হাঁটুর ব্যাথা দূর করার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি রয়েছে। অল্প পরিমাণ আদা তেতলে নিয়ে পানির মধ্যে ১৫ মিনিট ধরে ফুটাতে হবে। তারপর সেই পানিতে অল্প পরিমাণ মধু এবং অল্প একটু লেবুর রস যোগ করতে হবে। দিনে তিনবার এই মিশ্রণটি পান করলে হাঁটুর ব্যাথা অনেকটা স্বস্তি বোধ করবে।
  • হাঁটুর ব্যাথা দূর করার জন্য অল্প একটু হলুদ পানির মধ্যে দিয়ে দশ মিনিট ভালোভাবে ফুটাতে হবে। এরপর তার সঙ্গে অল্প পরিমাণ মধু মিশিয়ে পান করুন অথবা এক কাপ দুধের সাথে অল্প পরিমাণে হলুদ এবং আদা মিশিয়ে পান করলেও হাঁটুর ব্যাথা সেরে যাবে। তবে কেউ যদি হাঁটুর ব্যাথা নিরাময়ের জন্য ঔষধ খান তাহলে হলুদ খাওয়া আপনার জন্য ঠিক হবে না।
  • অনেক সময় মানুষের শরীরের অতিরিক্ত ওজনের জন্য হাঁটু ব্যাথা হয়ে থাকে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাছাড়া হাঁটুর জন্য যে সকল ব্যায়াম রয়েছে সেই সকল ব্যায়াম নিয়মিত করলে হাঁটুর ব্যাথা অনেকটা কমে যাবে।
  • হাঁটুর ব্যাথা আরাম পেতে আরো একটি উপায় রয়েছে। গরম পানিতে ভালো করে গোসল করলে ব্যাথা কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকবে এবং শরীর হালকা লাগবে।

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর খাবার

মানুষের হাঁটা চলার ক্ষেত্রে হাঁটুর ব্যাথা খুবই অস্বস্তি দেয়। বর্তমানে অনেক মানুষ এই হাঁটুর ব্যাথা ভোগে। হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে রয়েছে কিছু খাবার। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা হাঁটু ব্যাথার জন্য ঔষধের পাশাপাশি কিছু খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আসুন জেনে নেই সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

রসুনঃ রসুন রান্নায় স্বাদ পরিবর্তন আনার পাশাপাশি শরীরের ব্যাথা যন্ত্রণাও দূরে রাখে। কেননা রসুনে অ্যাান্টিইনফ্ল‍্যামেটরি উপাদান প্রমাণ রয়েছে,যা শরীরের পেশি সবল রাখতে সহায়তা করে। একই সঙ্গে জয়েন্টের ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। গরম ভাতের সাথে এক কোয়া রসুন খেতে পারেন অথবা কাঁচা রসুনও খেতে পারেন। এতে আপনি ব্যাথা থেকে উপকার পাবেন।

আদাঃ হাঁটুর ব্যাথা কমাতে আদা খুবই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। আদায় রয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগুন সমৃদ্ধ উপাদান। আদা রান্নায় ব্যবহার করা ব্যতীত চায়ের সাথেও আদা খেতে পারেন। হাঁটুর ব্যাথা কমাতে আদা বেশ উপকারী।
হাঁটুর ব্যাথা সারানোর খাবার
বাদামঃ চিনা বাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম এমন বিভিন্ন ধরনের বাদামে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ওমেগা ৩ অনেক পরিমাণে। প্রতিদিন সকালে অনেকেই ভেজানো বাদাম খান। এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। কিন্তু শুধু কাঠ বাদাম খেলে হবে না, সঙ্গে খেতে হবে আখরোট এবং কাজু বাদামও। তাছাড়াও ডায়েটে রাখুন চিয়া সিড, ফ্লাক্স সিডসের মত স্বাস্থ্যকর ও উপকারী কিছু বাদাম এবং বীজ। তাহলে হাঁটুর ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বেরিজাতীয় ফলঃ মৌসুমী ফলের স্বাস্থ্যগুণ অনেক থাকে। শরীরের ঠান্ডা লাগা কমানো থেকে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে ফল। শীতকাল শুরু হতেই বাজারে ছেড়ে যাই নানা ধরনের বাহারি ফলে। হাঁটুর ব্যাথা সারানোর জন্য আপনি সেখান থেকে কিছু ফল বেছে নিতে পারেন। যেমন- স্ট্রবেরি,ক্র্যানবেরি,ব্লুবেরির মত ফল, যেগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যাান্টি-অক্সিডেন্ট। হাঁটুর ব্যাথা নিয়ন্ত্রণের জন্য রোজ ডায়েটে এই ফলগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঔষুধের নাম

বর্তমান বাজারে হাঁটুর ব্যাথার জন্য নানা ধরনের ওষুধ রয়েছে। এক ধরনের ঔষধের বৈশিষ্ট্য হলো আপনার ব্যাথা এবং প্রদাহ কমাতে সহায়তা করবে। অন্য আরেক ধরনের ঔষধের বৈশিষ্ট্য হলো আপনার হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সহায়তা করবে। নিচে উভয় বৈশিষ্ট্যের ঔষধ সম্পর্কে জেনে নেই।

ব্যাথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্যকারী ঔষধ

নন- স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগস(NSAIDs)ঃ সাধারণত NSAIDs হল হাঁটুর ব্যাথা ও প্রদাহ কমানোর সবচেয়ে ব্যবহৃত ঔষধ। NSAIDs এর মাঝে রয়েছে ইবুপ্রফেন,ন্যাপ্রক্সেন,অ্যাসিটামিনফেন,ডাইক্লফেনাক ইত্যাদি উপাদান।

অপিওয়েডসঃ এটি হলো একটি শক্তিশালি ব্যথা নাশক ওষুধ যা হাঁটুর ব্যাথা দূর করতে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু অপিঅয়েডস গুলোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে অনেক, এজন্য সেগুলি দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য উপদেশ করা হয় না।

স্টেরয়েডসঃ স্টেরয়েডস হল একটি হরমোন প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। স্টেরয়েড গুলো ইনজেকশন, ট্যাবলেট অথবা মলম আকারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্যকারী ঔষধ

বাইওফ্ল্যাকসেন্টসঃ বাইওফ্ল্যাকসেন্টস হলো এমন এক ধরনের ঔষধ যার হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সহায়তা করে থাকে। বাইওফ্ল্যাকসেন্টস এর ভিতরে রয়েছে আ্যল্টেন্ড্রনেট,ইটিডারনেট,জার্লক্সিফেন ইত্যাদি উপাদান।

অ্যামিনব্লাস্টিকসঃ অ্যামিনব্লাস্টিকস এমন এক ধরনের ঔষধ যার হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সহায়তা করে থাকে। অ্যামিনব্লাস্টিকস এর ভেতরে রয়েছে জলেড্রনাট,ডেনসুম্যাব ইত্যাদি উপাদান।

হাঁটুর ব্যাথার জন্য ওষুধ নির্বাচন

হাঁটুর ব্যাথার জন্য ওষুধ নির্বাচন করার সময় নিচের দেওয়া বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে-
  • ব্যাথার কারণ
  • ব্যাথার তীব্রতা
  • রোগীর অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থা
  • রোগের বয়স এবং স্বাস্থ্য
হাঁটুর ব্যাথার জন্য ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ডাক্তার রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করতে সাহায্য করে থাকেন।

হাঁটুর ব্যাথার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের নাম

অনেক মানুষ আছেন যারা হোমিও ঔষধ সেবন করেন না। তারা হাঁটুর ব্যাথা নিরাময় করে থাকেন অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার মাধ্যমে। তাই আপনাদের সহযোগিতার জন্য এই আর্টিকেলে হাঁটু ব্যাথার জন্য এন্টিবায়োটিক কিছু ঔষধের নাম উল্লেখ করা হলো। যেগুলো সময় মেনে সেবন করলে হাঁটুর ব্যাথা থেকে আপনি অতি তাড়াতাড়ি পরিত্রাণ পাবেন। আসুন সেই অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ গুলোর নাম জেনে নেই।
  • এফেনাক
  • ক্লোফেনাক
  • ক্যালবো-ডি Tablet
  • Neso Tablet
  • Acical-D Tablet
  • ডিক্লোমল ট্যাবলেট

হাঁটুর ব্যাথা ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সব সময়ই থাকে। কিন্তু সে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সবার ক্ষেত্রে দেখা যায় না। প্রতিটি ঔষধ যখন বাজারজাত করা হয় তখন সাথে সাথে সেই ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো তারা বলে দেয়। নিচে আপনাদের হাঁটুর ব্যাথার অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো দেওয়া হল -
  • পেট ব্যথা(Abdominal Pain)
  • কোষ্ঠকাঠিন্য(Constipation)
  • ডায়রিয়া(Diarrhoea)
  • বমি বমি ভাব(Nausea or Vomiting)
  • চামড়াতে ফুসকুড়ি(Skin Rash)
  • টেন্ডিনাইটিস(Tinnitus)

হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম

হাটুর ব্যাথার সমস্যা এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারের শোনা যায়। আগে মানুষের বয়স বাড়লে হাঁটু অথবা কোমরে ব্যাথার সমস্যার কথা শোনা যেত কিন্তু এখন অনেক কম বয়সেও হাঁটুর ব্যাথার সমস্যা হচ্ছে।হাঁটুর ব্যাথা ঘরোয়া উপায় এ সারানোর জন্য ব্যায়াম করার কোন বিকল্প নেই। তবে আপনার হাঁটু তখনি ভালো রাখতে পারবেন যখন আপনি নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ব্যায়াম করলে হাঁটু ভালো থাকবে।

লায়িং হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচঃ মেঝেতে টানটান হয়ে শুয়ে যেয়ে বাম পা উপরে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে মাটির সাথে পা ৯০° কোণে রাখতে হবে। দুই হাত বা উড়ুর নিচে দিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। তারপর বাম হাটু আস্তে আস্তে বুকের কাছে আনার চেষ্টা করতে হবে। ৩০ সেকেন্ড ধরে রেখে আবার স্বাভাবিক জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এইভাবে দুই পায়েই ব্যায়াম করতে হবে। ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত পা ধরে রাখতে পারবেন।
হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম
হাফ স্কোয়াটঃ এ ব্যায়াম দাঁড়িয়ে করতে হবে। দুই হাত সামনের দিকে তুলে রাখতে হবে,আপনি চাইলে মুঠো করতে পারেন। কিন্তু পুরোপুরি নয়, অর্ধেক বসার ভঙ্গি পর্যন্ত রেখেই আবার উঠে পড়তে হবে। এরকম ভাবে অন্তত দশেক ব্যায়াম করতে হবে। সাধারণত এই হাফ স্কোয়াট ব্যায়াম করতে ব্যাথা হওয়া উচিত নয়। কিন্তু কারো যদি ব্যাথা হয় সেটি প্রাথমিক। কেউ যদি নিয়মিত স্কোয়াট বা হাফ স্কোয়াট ব্যায়াম করে তাহলে ব্যাথা হবে না।

লেগ রেজঃ মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে দুই হাতের তালু মেঝের উপরে রাখতে হবে। এরপর বাম পা আস্তে আস্তে উপরে তুলতে হবে। মাটি থেকে কমপক্ষে ৪৫ ডিগ্রি কোণে তুললে ভালো হবে। এভাবে ৫ সেকেন্ড পা তুলে রাখুন। তারপর ধীরে ধীরে পা নামিয়ে নিন। একইভাবে ডান পা উপরে তুলতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর পা নামিয়ে নিতে হবে। প্রথমের দিকে ২ পায়ে ৪ বার করে এই লেগ রেজ ব্যায়াম করতে হবে। পরে ধীরে ধীরে ক্ষমতা বাড়লে এই লেগ রেজের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

হাঁটুর ব্যাথার জন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

হোমিওপ্যাথি ওষুধের চিকিৎসা বহুল জনপ্রিয়। শরীরের লক্ষণ এবং রোগের উপর ভিত্তি করে এই চিকিৎসা দেয়া হয়। এটি একমাত্র উপায় যা শরীরের রক্ষণ এবং রোগের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করলে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা যায়। হোমিওপ্যাথি ঔষধ কেবল হাঁটুর ব্যাথার লক্ষণ কে দূর করে না বরং ভেতরের কারণ কেউ ঠিক করে। আসুন জেনে নিন হাঁটুর ব্যাথার কিছু হোমিওপ্যাথি প্রতিকার সম্পর্কে।

ব্রাওনিয়া অ্যালবাঃ যখন হাঁটতে গিয়ে হাঁটুতে ব্যাথা হয় তার জন্য হোমিওপ্যাথি প্রতিকার বেশ কার্যকরী। আপনি যখন হাটেন না তখন আপনার হাঁটুর ব্যাথা কমে যায় এবং হাঁটুর সন্ধিগুলো অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। হাঁটুর ব্যাথা যদি আর্থ্রাইটিস এর কারনে হয় তাহলে ব্রায়োনিয়া অ্যালবা এই ব্যাথার একটি কার্যকরী প্রতিকার।

রাশটক্সঃ আবহাওয়ার জন্য যদি আপনার হাঁটুর ব্যাথা শুরু হয় তবে এই ব্যাথা নিরাময়ে রাশটক্স আপনাকে সহায়তা করতে পারে।

কোলচিয়ামঃ যখন কোন কারনে আপনার ব্যাথা হয় এবং গরম আদ্র তাই আরাম করলে ঠিক হয়ে যায় তখন কোলচিয়াম ঔষধটি আপনার জন্য বেশ কার্যকর হতে পারে।

সিলিসিয়াঃ হাঁটুর ব্যাথা নিরাময় করতে এই ঔষধটি অত্যন্ত উপকারী, যা সব সময় দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকায় সংবেদন বজায় রেখে থাকে।

লাচেসিসঃ রিউমাটয়েড অথ্রাইটিসের কারণে যদি হাঁটুর ব্যাথা হয় তবে লাচেসিস ওষুধটি খুব ভালো প্রতিকার করে। ব্যাথা যদি ব্যথাযুক্ত স্থানের আশেপাশে ও বৃদ্ধি পায় তবে এক্ষেত্রেও লাচেসিস বেশ উপকারী ঔষধ।

লেখকের শেষ কথা

বর্তমান সময়ে হাঁটুর ব্যাথা একটি পরিচিত সমস্যায় পরিণত হয়েছে। চলাফেরাই হাঁটুর ব্যাথা খুবই অস্বস্তি দেয়। আজকের এই আর্টিকেলে হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঘরোয়া উপায়,হাটুর ব্যাথা সারানোর ব্যায়াম, হাঁটুর ব্যাথা সারানোর খাবার,হাঁটুর ব্যাথা সারানোর ঔষধ ও ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলের সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। আপনি যদি আজকের আর্টিকেল সম্পর্কে কিছু বুঝতে না পারেন বা অন্য কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিজের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url